বৃক্ষরোপণ কি শুধু পরিবেশ রক্ষা? জানুন কেন ছাত্রশিবির বলছে এটি সাদকায়ে জারিয়াহ!

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখার উদ্যোগে ‘কেন্দ্র ঘোষিত মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ২০২৫’ এর অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয় এক বিশেষ বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ কর্মসূচি। কর্মসূচিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এবং এতে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সরব অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।

কর্মসূচি পরিচালনা করেন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখার সেক্রেটারি রেজাউল করিম। তিনি বলেন, “আমরা শুধু একটি গাছ লাগাইনি, একটি নতুন জীবন আর একটি সবুজ পৃথিবীর স্বপ্ন বপন করেছি।” এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা তৈরি এবং বৃক্ষের গুরুত্ব সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও শাখা সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “বর্তমান বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন এক ভয়াবহ সংকট। এর মোকাবিলায় আমাদের প্রত্যেককে ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু সরকার বা এনজিও নয়—বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও এগিয়ে আসতে হবে পরিবেশ রক্ষায়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “বৃক্ষরোপণ শুধু একটি পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ নয়, এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব। একটি গাছ অনেক প্রাণের উপকারে আসে—ছায়া দেয়, ফল দেয়, এমনকি বৃষ্টিপাতেও ভূমিকা রাখে। তাই সবাইকে বছরে অন্তত একটি গাছ লাগানোর আহ্বান জানাই।”

কর্মসূচির প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার সম্পাদক সিফাত আলম। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “বৃক্ষরোপণ করেই দায়িত্ব শেষ নয়। গাছের যত্ন নিতে হবে, যেন তা বেড়ে ওঠে, বড় হয়ে পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।”

তিনি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে অভিহিত করেছেন। একটি গাছ থেকে যতদিন মানুষ বা প্রাণী উপকৃত হবে, ততদিন এর সাওয়াব সদকায়ে জারিয়াহ হিসেবে থেকে যাবে।”

তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীরা শুধু নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবলেই হবে না, সমাজ ও পরিবেশের প্রতিও দায়িত্বশীল হতে হবে। বৃক্ষরোপণ একটি চমৎকার উপায় যার মাধ্যমে ব্যক্তি এবং সমাজ—উভয়ের উপকার হয়।”

কর্মসূচির বিশেষ দিক ছিল চারা বিতরণ। শতাধিক চারা শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়, যাতে তারা নিজেরা ঘরে বা ক্যাম্পাসে তা রোপণ করতে পারে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয় এবং পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।

উপসংহারে বলা যায়, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিটি শুধু একটি ইভেন্ট নয়, বরং একটি সচেতনতার আন্দোলন। বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যদি এগিয়ে আসে, তাহলে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ, সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর বাংলাদেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারে:

  • বৃক্ষরোপণ কি সত্যিই সাদকায়ে জারিয়াহ?
  • শুধু গাছ লাগালেই কি দায়িত্ব শেষ?
  • শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে কীভাবে সমাজে পরিবেশ সচেতনতা ছড়ানো যায়?