“জামায়াত যদি নির্বাচন করতে পারে, তবে আওয়ামী লীগ কেন পারবে না?”—এমন প্রশ্ন তুলে সাম্প্রতিক এক ভিডিও বার্তায় সরব হলেন টেলিভিশন উপস্থাপক ও বিশিষ্ট সাংবাদিক জিল্লুর রহমান।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি প্রকাশিত ভিডিওতে তিনি বলেন,
“আওয়ামী লীগকে নিয়ে যেমন অনুশোচনার কথা বলা হয়, তেমনি জামায়াতও তো গত ৫৩-৫৪ বছরে জাতির কাছে কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। ১৯৭১ সালে লাখো মানুষের প্রাণ গেছে—সে দায় কি তারা স্বীকার করেছে?”
তিনি আরও বলেন, কেউ যদি বলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমা চাইতে হবে, আমি তাতে একমত। কিন্তু যদি একই সঙ্গে আমি জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে বলি, তাহলে সেটি কি অন্যায় হয়ে যাবে?
আইনি প্রশ্ন ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগের বিরুদ্ধেও তিনি মত দিয়েছেন। তিনি বলেন,
“যেভাবে জামায়াতকে কাগজ-কলমের খোঁচায় নিষিদ্ধ করা যায়নি, সেভাবেই আওয়ামী লীগকেও কাগজে নিষিদ্ধ করে বাস্তবে ঠেকানো যাবে না।”
জিল্লুর রহমান দাবি করেন, এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার-ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
নির্বাচনের প্রসঙ্গে স্পষ্ট বক্তব্য:
৮ তারিখ রাত থেকে তিনি বলে আসছেন—একটি ইনক্লুসিভ নির্বাচন প্রয়োজন, যেখানে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।
তাঁর মতে,
“আমি এই দাবি করছি না আওয়ামী লীগকে রক্ষা করার জন্য, বরং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য। অপরাধ করলে সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, কিন্তু দল হিসেবে তারা ইতিহাস গড়েছে—তাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া অনৈতিক।”
ভবিষ্যতের রাজনীতি ও বিএনপি প্রসঙ্গ:
এই বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের পক্ষে নয়, বরং বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“আগামী দিনে যারা ক্ষমতায় যাবেন, তাদের যেন শেখ হাসিনার আমলের মত একপেশে নির্বাচনে না জয়ী হতে হয়। এই ইনক্লুসিভ নির্বাচনই ভবিষ্যতের জন্য কল্যাণকর,”—বলেছেন জিল্লুর রহমান।
ভিডিও রেফারেন্স:
এই মন্তব্যগুলো তিনি দিয়েছেন তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে সম্প্রতি প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায়। সেখানে তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, এবং নির্বাচন ব্যবস্থার ভবিষ্যত নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ করেছেন।
এমন সময়ে যখন দেশের রাজনৈতিক মেরুকরণ চরমে, তখন সাংবাদিক জিল্লুর রহমানের এই বক্তব্য এক ধরনের গঠনমূলক বিতর্ক উসকে দিয়েছে। একপেশে ব্যাখ্যার বদলে ইতিহাস, অধিকার, এবং সমতাভিত্তিক রাজনীতির কথা তুলে ধরার মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক চর্চার প্রতি তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।