ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (UIU) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আজ নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে, যখন কয়েকজন আন্দোলনকারী দাবি করেন—ইসলামী ছাত্র শিবিরের সম্ভাব্য ছায়া বা বাহ্যিক রাজনৈতিক প্রভাব শিক্ষার্থীদের দাবির পবিত্রতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। তবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কঠোর ও স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া হয়েছে—“আমাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে শিবির কিংবা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা নেই।”
আন্দোলনের মূল দাবি:
- ২৬ জন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বাতিল
- প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
- শিক্ষার নামে আর্থিক শোষণ বন্ধ
- রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত ক্যাম্পাস নিশ্চিত
শিবির প্রসঙ্গ: শিক্ষার্থীদের অবস্থান
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ—কিছু মহল আন্দোলনের নামে বাহ্যিক রাজনৈতিক স্বার্থে লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা বলেন:
“UIU-তে আমরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করি না। আমাদের আন্দোলন স্বতঃস্ফূর্ত, অহিংস এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষার জন্য। শিবির বা যেকোনো বাহ্যিক দলের হস্তক্ষেপ আমরা প্রত্যাখ্যান করি।”
এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং শিক্ষার্থীদের একাত্মতা স্পষ্ট হয়।
পুলিশি হস্তক্ষেপ ও সংঘর্ষ
আজ সকালে Notun Bazar মোড়ে শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবরোধ শুরু করলে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাটন চার্জ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন:
“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসেছিলাম। কোনো রাজনৈতিক স্লোগান ছিল না। তবু হঠাৎ পুলিশ এসে হামলা করে।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
UIU কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বহিষ্কারাদেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তুতি রয়েছে। তবে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তারা সরাসরি অস্বীকার করেছেন।
আগামীর ঘোষণা
আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, শনিবার (২২ জুন) রাত পর্যন্ত দাবি পূরণ না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন। তাদের কথায়:
UIU-র আন্দোলন শুধু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি নয়, এটি বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ও নীতিগত স্বাধীনতার একটি প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠছে। শিবির বা অন্যান্য রাজনৈতিক শক্তির ছায়া দূরে রেখেই শিক্ষার্থীরা একটি দায়িত্বশীল পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়—প্রশাসন কতটা কানে নেয় এই নিরপেক্ষ প্রতিবাদ।