রাজধানীর নতুনবাজার এলাকায় আজ সকাল থেকেই চরম যানজটের সৃষ্টি হয়, যখন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (UIU)-এর শিক্ষার্থীরা ‘অন্যায় বহিষ্কার’ ও প্রশাসনিক ‘অবিচারের’ প্রতিবাদে রাস্তায় অবস্থান নেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোনো প্রকার তদন্ত ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২৬ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে, যারা আগের কয়েকটি দাবির আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। এই ঘটনাকে ‘প্রশাসনের দমননীতি’ আখ্যা দিয়ে UIU শিক্ষার্থীরা সকাল ৯টা থেকে নতুনবাজার মোড়ে অবস্থান নেন।
প্রতিবাদকারীদের দাবি:
- ২৬ জন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর শাস্তি প্রত্যাহার
- উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগ
- সিন্ডিকেট সভার কার্যবিবরণী প্রকাশ
- বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতকরণ
ঘটনাস্থলে
ছাত্রদের হাতে ছিল “অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও”, “শিক্ষাঙ্গনে ভয়ের পরিবেশ নয়” ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড। বিক্ষোভের কারণে নতুনবাজার এলাকা থেকে কুরিল, বাড্ডা ও বসুন্ধরা যাওয়ার সড়কগুলিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পুলিশি অবস্থান ও সংঘর্ষ
ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ সদস্যরা প্রথমে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করলেও, একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু হয়। এতে অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থী আহত হন বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, “শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”
একজন শিক্ষার্থীর বক্তব্য:
“আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায্য দাবি উপস্থাপন করেছি। কিন্তু আমাদের উপর পুলিশের হামলা প্রমাণ করে, প্রশাসন ভয় পায় জবাবদিহি দিতে।”
পরবর্তী কর্মসূচি
আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি মানা না হলে ২২ জুন ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ‘ঢাকা ব্লকাড’ কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া, অন্যান্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনায় রয়েছে। আমরা অচিরেই আলোচনা শুরু করব।” যদিও শিক্ষার্থীরা এমন আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন।
UIU শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ কেবল একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকট নয়, এটি বাংলাদেশের বেসরকারি উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় জবাবদিহিতার অভাব ও দমননীতি নিয়ে বৃহত্তর প্রশ্ন তুলে ধরেছে।