কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সম্পূর্ণ জমি বুঝে পেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

অবশেষে রাজধানীর কেরানীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের জন্য নির্ধারিত ২০০ একর জমি পুরোপুরি বুঝে পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় হস্তান্তরে বাকি থাকা ১১ দশমিক ৪০ একর জমি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে ঢাকা জেলা প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জমির পূর্ণ হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

২০১৭ সাল থেকে দীর্ঘ পথচলা

২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় ২০০ একর জমির উপর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম দফায় ১৮৮ দশমিক ৬০ একর জমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। তবে হস্তান্তর বাকি ছিল ১১ দশমিক ৪০ একর জমি, যা মঙ্গলবার বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এই জমি কেরানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিমদী মৌজায় অবস্থিত এবং সরকারি খাস খতিয়ানের আওতাভুক্ত।

‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বললেন রেজিস্ট্রার

এ প্রসঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. গিয়াস উদ্দিন বলেন,

“আজকের জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে আমাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।”

তিনি আরও বলেন,

“আমরা খুব দ্রুত টেন্ডার আহ্বান এবং নির্মাণ কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের আন্তরিক সহযোগিতায় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কাজটি বাস্তবায়ন সম্ভব হলো।”

উপাচার্যের আশাবাদ

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন,

“এই জমিটুকু আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর বাকি ছিল। অবশেষে সেটিও আমরা বুঝে পেলাম। আরডিপিপি অনুমোদন হয়েছে, আশা করছি দ্রুত গতিতে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ এগিয়ে যাবে।”

তিনি আরও বলেন,

“এটি আমাদের পূর্ণাঙ্গ ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের পথে বড় অগ্রগতি। খুব শিগগিরই নির্মাণ কাজ শুরু হবে।”

সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন : ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এটি ‘অর্পিত ক্রয় কার্য’ (Deposited Work) হিসেবে সেনাবাহিনী বাস্তবায়ন করবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা ও চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। মূল ক্যাম্পাসের সীমিত পরিসরের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই নতুন স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবি ছিল ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের। জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে অবশেষে সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে।