মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় খালাস পেলেন জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এমন কোনো মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি খালাস পেলেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত আজহারুল ইসলামকে সব অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন।

২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেন। অভিযোগ ছিল, তিনি রংপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় হত্যা, গণহত্যা ও ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধে জড়িত ছিলেন।

তবে আপিল বিভাগের বিচারকগণ দীর্ঘ শুনানি শেষে পর্যবেক্ষণে বলেন, “রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।” ফলে, আইনের পরিপন্থীভাবে কোনো ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া যায় না বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।

আজহারুল ইসলামের আইনজীবীরা রায়ের পর সংবাদমাধ্যমকে জানান, “এটি ন্যায়বিচারের বিজয়। আদালত প্রমাণ ও সাক্ষ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।” তারা আরও বলেন, এই রায়ের ফলে আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।

এই রায়ের মধ্য দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ধারায় এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। যেখানে একটি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত রায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে এসে খারিজ হলো এবং আসামি খালাস পেলেন। এতে বিচারিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

তবে এই রায় নিয়ে দেশজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ একে ন্যায়বিচারের বিজয় বলে স্বাগত জানালেও, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী অনেকে এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন।