কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের দুটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব চূড়ান্ত রূপ নেয় সহিংসতায়। গতকাল (রবিবার) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেটে পদবঞ্চিত গ্রুপের নেতা ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ শেখের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হামলাকারীরা হেলমেট পরা ছিল এবং হঠাৎ করেই সৌরভ শেখকে ঘিরে ধরে তার মাথায় ধারালো ও ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। হামলার পরপরই ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থমথমে হয়ে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত এবং চলমান গ্রুপিং রাজনীতিরই পরিণতি। সৌরভ শেখ দীর্ঘদিন ধরে প্রাইভেট ছাত্রদলের সভাপতি হুরায়রা ও সাধারণ সম্পাদক বিন্দুর বিরুদ্ধে পকেট কমিটি গঠনের অভিযোগ এনে আন্দোলন করে আসছিলেন। তার অভিযোগ ছিল, প্রকৃত ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে সুবিধাভোগীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তার সেই বিরোধিতার জের ধরেই এই সহিংস হামলা চালানো হয়েছে।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি না এলেও অভ্যন্তরীণভাবে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানা গেছে।
এদিকে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির নামে গোষ্ঠীগত সহিংসতা শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করছে। এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা পড়তে এসেছি, গুলির আওয়াজ বা লাঠির ঘা কানে শুনতে নয়।” তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান।
অনেকে অভিযোগ করেন, প্রশাসনের নীরবতা ও উদাসীনতাই এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটার সুযোগ করে দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মতে, প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে ক্যাম্পাসে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।