“ঐক্যের ১২টা বাজিয়ে এখন ক্ষমা চাও কেন?”—রাশেদ খাঁনের কড়া প্রতিক্রিয়া

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
19 বার দেখা হয়েছে

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাতে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে এক পোস্টে রাজনৈতিক অঙ্গনের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করে বলেন, “ঐক্যের ১২টা বাজিয়ে এখন ক্ষমা চাও কেন?” তবে তিনি তার পোস্টে সরাসরি কারো নাম উল্লেখ করেননি।

পোস্টে রাশেদ খাঁন লেখেন, “পদত্যাগ করার পরেই জনগণ ক্ষমার চিন্তা করবে। দেশের ঐক্যের ১২টা বাজিয়ে এখন ক্ষমা চাও কেন?” তিনি প্রশ্ন তোলেন, যারা গণঅভ্যুত্থানের মূল স্টেকহোল্ডারদের বাদ দিয়ে নিজেকে ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও ‘উপদেষ্টা’ বানাতে চেয়েছেন, তারা কি এখন বুঝতে পারছেন, তাতে সুখ ছিল না?

তিনি আরও লেখেন, “নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে তুমি পুরোপুরি ধ্বংস করেছ। তুমি নাকি মানুষকে দেশ চালাতে ও রাজনীতি করতে দিবা না! তোমার অহংকার, ঔদ্ধত্য শুধু তোমাকে নয়, তোমাদের ফাঁদে যারা পড়েছে, তাদের অবস্থাও তোমার মতোই হবে।”

রাশেদ খাঁনের এই বক্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টটি শেয়ার ও মন্তব্যের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বক্তব্য মূলত সেই সকল নেতৃত্ব বা ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, যারা আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের সুযোগ নিয়ে একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন।

রাশেদ আরও লেখেন, “একটা গণঅভ্যুত্থানের পরে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ না রেখে অনৈক্য ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ভেবেছিলে একলাই হিরো হবা, আজীবন দেশের ক্ষমতা ধরে রাখবা। কিন্তু এই দেশের জনগণ যেমন মাথায় তুলে নাচতে জানে, তেমনি ধপাস করে ফেলতেও জানে।”

তাঁর এই মন্তব্য স্পষ্টতই ইঙ্গিতপূর্ণ, যা চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নেতৃত্ব সংকটের প্রেক্ষাপটে ব্যাপক তাৎপর্য বহন করে। অনেকেই মনে করছেন, গত বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-যুব সংগঠনের মধ্যে গড়ে ওঠা ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যজোট এখন অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর সেই হতাশা থেকেই এসেছে এই পোস্ট।

তবে রাশেদ খাঁনের পোস্টে যেহেতু কারো নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি, তাই কার উদ্দেশ্যে এই বক্তব্য তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কেউ মনে করছেন, তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপর্যায়ের কাউকে উদ্দেশ করে এই বক্তব্য দিয়েছেন, আবার কেউ বলছেন, এটি ঐক্যের ভেতরে থাকা কোনো রাজনৈতিক বা ছাত্রনেতার প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ।

এই প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে—আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা কী সত্যিই গণআকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করছেন, নাকি ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষাই সামনে চলে এসেছে?

সামগ্রিকভাবে, রাশেদ খাঁনের এই পোস্ট রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে এবং নেতৃত্ব সংকট ও রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতা নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন