প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে এনসিপি নেতার সাক্ষাৎ, পদত্যাগের গুজব ভিত্তিহীন

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
23 বার দেখা হয়েছে

বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সাক্ষাৎটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর সরকারি বাসভবন যমুনায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।

বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ সংক্রান্ত গুজবকে কেন্দ্র করেই এ সাক্ষাতের আয়োজন করা হয়। নাহিদ ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাতে উপস্থিত ছিলেন দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকেই একটি ভুয়া চিঠি এবং ২০১১ সালের একটি পুরোনো সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এই গুজব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যা জনমনে বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করে।

তবে একাধিক সূত্র এবং পর্যালোচনায় উঠে আসে, এই চিঠি ও সংবাদটি ভুয়া এবং সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াতে এ ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে বলেও দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট মহল।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আমি একাই দেখা করেছি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সামাজিক বিভ্রান্তি এবং দেশের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কোনো ধরনের পদত্যাগ বা সংকট নেই। তিনি এখনও দায়িত্ব পালন করছেন।”

সাক্ষাতে নাহিদ ইসলাম প্রধান উপদেষ্টাকে আশ্বস্ত করে জানান, “দেশের ছাত্র সমাজ এবং সাধারণ জনগণ এখনো তাঁর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। ফ্যাসিবাদবিরোধী যে ঐক্য গঠিত হয়েছে, তার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে দেখা দেওয়া বিভাজন কোনোভাবেই দেশের জন্য কল্যাণকর নয়। তাই এনসিপি ঐক্য ধরে রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় দায়িত্বশীল রাজনীতি প্রয়োজন, গুজবের রাজনীতি নয়। দেশের জনগণ এখন স্থিতিশীলতা ও সুশাসনের প্রত্যাশা করে।”

সাক্ষাতে দেশের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা, প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা এবং ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়েও আলোচনা হয় বলে সূত্রটি জানিয়েছে।

এদিকে, সংশ্লিষ্ট মহল থেকে গুজব ছড়ানো বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো যারা করেছে, তাদের শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

সার্বিকভাবে, সাক্ষাৎটি শুধু গুজব প্রতিহত করার উদ্যোগই নয়, বরং রাজনৈতিক সমঝোতা ও ভবিষ্যতের করণীয় নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন