শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং শিক্ষা সংস্কারের দাবি ছাত্রশিবিরের

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
34 বার দেখা হয়েছে

দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়েছে ইসলামী ছাত্রশিবির। সংগঠনটির সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম সাদ্দাম এ দাবি জানান সোমবার (১৯ মে) বিকেলে নোয়াখালীর সেনবাগে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে।

অনুষ্ঠানটি ছিল নোয়াখালী জেলা উত্তর শাখার ৮৭তম শহীদ গোলাম জাকারিয়ার ২৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাদ্দাম বলেন, “বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অবিলম্বে দিতে হবে। আমরা চাই না কোনো শক্তির ইশারায় এসব নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হোক এবং এর মাধ্যমে ক্যাম্পাসগুলোতে নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েমের সুযোগ তৈরি হোক।”

তিনি আরও বলেন, “ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে এবং সে প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমেই তারা তাদের দাবিদাওয়া উপস্থাপন করবে। পাশাপাশি একটি সুষ্ঠু ও সহনশীল ক্যাম্পাস সংস্কৃতি গড়ে উঠবে।”

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি বলে মন্তব্য করেন শিবির সেক্রেটারি। “আমরা ডাকসু, রাকসু, জাকসু নির্বাচনের রূপরেখা দেখেছি, কিন্তু প্রশাসন এখনো নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত তারিখ ঘোষণার দাবি জানাই,” বলেন তিনি।

হল দখল, নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদী শাসনের অভিযোগ

নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, “আমরা চাই না ক্যাম্পাসে কোনো মায়ের বুক খালি হোক। বহুদিন ধরে হলগুলোতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্রসংগঠনগুলো দখলদারিত্ব চালিয়েছে। যারা ভিন্নমত পোষণ করেছে, তাদের আবরার ফাহাদের মতো করে টেনে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সাধারণ ছাত্ররা হলের সিট পায়নি শুধুমাত্র রাজনৈতিক মতভেদের কারণে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা বলেছি, ক্যাম্পাসগুলোকে হতে হবে ‘মার্কেট প্লেস অব ভ্যালুস’। যেখানে ছাত্ররা মেধার ভিত্তিতে হলে সিট পাবে। দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে নয়।”

শিক্ষা সংস্কার ও কমিশন গঠনের দাবি

শিক্ষা সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইসলামী ছাত্রশিবির বারবার বলছে, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনা আমরা বহুবার দিয়েছি, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। নানা রকম কমিশন গঠন হলেও শিক্ষা সংস্কার কমিশনের কোনো উদ্যোগ দেখা যায় না।”

তিনি অভিযোগ করেন, “জনগণের কোনো দাবি না থাকলেও বিতর্কিত নারী কমিশন গঠন করে দেশে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ ক্যাম্পাসগুলোতে যেখানে সত্যিকারের সমস্যা আছে, সেখানে সংস্কারমুখী পদক্ষেপের কোনো উদ্যোগ নেই।”

নুরুল ইসলাম সাদ্দাম আরও বলেন, “আমরা চাই শিক্ষা ব্যবস্থার এই হযবরল অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি ইউনিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক। এজন্য অবিলম্বে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে।”

সভায় উপস্থিত ছিলেন নেতৃবৃন্দ

নোয়াখালী জেলা উত্তর সভাপতি মো. দাউদ ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সেনবাগ উপজেলা জামায়াতের আমির ইয়াসিন করিম, শহীদ গোলাম জাকারিয়ার বড় ভাই গোলাম কিবরিয়া, নোয়াখালী জেলার নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহমদ, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মো. নোমান হোসেন নয়ন।

এছাড়া সভায় কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও নোয়াখালী শহর সভাপতি হাবিবুর রহমান আরমান, নোয়াখালী জেলা দক্ষিণ শাখার সভাপতি হাফেজ সাইফুর রসুল ফুয়াদ, সেনবাগ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল আফসারসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন