
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে অনুষ্ঠিত আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকলেও, আন্দোলনের আংশিক সফলতার পর কিছু রাজনৈতিক দল তাদের সংযুক্তি অস্বীকার করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।
সোমবার (১২ মে) সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি এসব মন্তব্য করেন। রাশেদ খান লিখেছেন, “আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কর্মসূচিতে যমুনা কিংবা শাহবাগ ঘেরাওয়ে সর্বশক্তি নিয়ে উপস্থিত ছিলো জামায়াত-শিবির। জাশি (জাতীয় নাগরিক পার্টি – এনসিপি) ও জামায়াত-শিবির নেতাদের একসাথে বসে ও দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে দেখা গেছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, “এ আন্দোলনে ৬০ শতাংশের বেশি বিভিন্ন ইসলামিক দলের নেতাকর্মী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল। তাদের অংশগ্রহণ না থাকলে এ আন্দোলন এতটা প্রভাব ফেলতো না।”
তবে আন্দোলন আংশিক সফল হওয়ার পর থেকেই এনসিপির নেতারা জামায়াত-শিবিরের তকমা ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। রাশেদ খান বলেন, “এনসিপির কমিটিতেই শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতা রয়েছেন। অনেকে যারা এখন জামায়াত-শিবিরকে সমালোচনা করছে, তারাও একসময় শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।”
পোস্টে তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, “জামায়াত-শিবিরকে ব্যবহার করে এখন তাদের ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটা অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য ও দ্বিমুখী আচরণ।”
এ প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, “কিছু মহল থেকে বলা হচ্ছে শাহবাগের প্রতিশোধ নিয়েছে জামায়াত-শিবির। আমি এভাবে বলতে চাই না। কারণ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জোরালো দাবি জনগণের পক্ষ থেকেই এসেছে। তবে প্রশ্ন উঠেছে, যমুনার আন্দোলন কেন শাহবাগে গেল?”
রাশেদ খান পোস্টের শেষাংশে সতর্কবার্তাও দেন, “জামায়াত-শিবিরকে কাজে লাগানো শেষ, এখন তাদের পাকিস্তানপন্থি বলে চালিয়ে দাও — যদি জাশির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) এখান থেকে ন্যূনতম শিক্ষা নেয়, তবে ভবিষ্যতে তারা হয়তো এমন আহ্বানে সাড়া দেবে না। তবে যদি তারা মনে করে, চড় মেরে ক্ষমা চাইলেই সব মাফ হয়ে যাবে, তবে পরবর্তী ডাক আসলে তারা আবার মাঠে নামবে।”
তিনি মন্তব্য করেন, “যদি তাদের রাজনীতির উদ্দেশ্যই হয়, অন্যের আহ্বানে জনশক্তি সরবরাহ করা, তবে সে বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান আন্দোলনের এই অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন আগামী দিনে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে।