
মাত্র ৮৭ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের ভয়াবহ ও বহুমাত্রিক যুদ্ধ দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী— ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক ও সামরিক ক্ষতি ডেকে এনেছে। এই সীমিত সময়ের সংঘাতে ক্ষতির পরিমাণই দেখিয়ে দিয়েছে, আধুনিক যুগে যুদ্ধ মানে কেবল গোলাগুলি নয়, বরং অর্থনীতির মেরুদণ্ডে আঘাত হানা।
এই যুদ্ধের সূচনা হয় ৭ মে রাত ১টা ৫ মিনিটে। ভারতীয় বিমানবাহিনী আকস্মিক হামলা চালায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পরিচিত এই অভিযানে ব্যবহৃত হয় উন্নত প্রযুক্তির রাফায়েল যুদ্ধবিমান, স্টর্ম শ্যাডো মিসাইল এবং হ্যামার বোমা। ভারতের টার্গেট ছিল পাকিস্তানের ৯টি বেসামরিক এলাকা এবং সম্ভাব্য সামরিক স্থাপনা। একই সময় ভারতের ড্রোন পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার তৎপরতা যাচাইয়ের চেষ্টা করে।
পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও অত্যন্ত দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানায়। চীনের তৈরি জে-১০সি যুদ্ধবিমান, কোরাল ইলেকট্রনিক জ্যামার ও শর্ট রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তান প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং ১২টি ড্রোন ধ্বংস করেছে। এর মধ্যে বেশ কিছু ড্রোন ধ্বংস হয় ইলেকট্রনিক জ্যামিং ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ব্যবস্থার মাধ্যমে।
তবে সবচেয়ে বড় আঘাতটি এসেছে অর্থনীতিতে। ভারতের পক্ষ থেকে এ ধরনের সংঘাতের প্রস্তুতি থাকলেও মাত্র ৮৭ ঘণ্টার যুদ্ধে দেশটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৮৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষতির মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ এসেছে শেয়ারবাজার থেকে। নিফটি ও সেনসেক্সে একযোগে ধস নামায় বাজার থেকে উবে গেছে প্রায় ৮২ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া, উত্তর ভারতের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন প্রায় ৮ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ থাকার কারণে। আইপিএল স্থগিত হওয়ায় ক্ষতি হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ডলার। যুদ্ধবিমান হারিয়ে সরাসরি ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৪০০ মিলিয়ন ডলার। সামরিক ব্যয়ে যোগ হয়েছে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং লজিস্টিক ও বাণিজ্য খাতে ক্ষতি ছাড়িয়েছে ২ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম হলেও, তা কোনোভাবেই অপ্রাসঙ্গিক নয়। দেশটি আনুমানিক ৪ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছে। করাচি শেয়ারবাজারে সূচকের পতনে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) স্থগিত হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ১০ মিলিয়ন ডলার। আকাশসীমা বন্ধ থাকায় ক্ষতি হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার, এবং প্রতিদিনের সামরিক ব্যয় গড়ে ছিল ২৫ মিলিয়ন ডলার। ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার বাবদ অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার।
এই সংঘাত প্রমাণ করে দিয়েছে, বর্তমান বিশ্বের যেকোনো সামরিক উত্তেজনা সরাসরি আঘাত হানে অর্থনীতিতে। বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারান, বৈদেশিক বিনিয়োগে স্থবিরতা তৈরি হয় এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, আধুনিক যুদ্ধের প্রকৃতি এখন আর শুধুমাত্র গোলাবারুদ, ট্যাংক কিংবা যুদ্ধবিমানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। প্রযুক্তি, তথ্য, মনস্তত্ত্ব এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা— সব মিলিয়ে যুদ্ধ এখন একটি বহুস্তরীয় কৌশল। এই যুদ্ধে ঘণ্টায় এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে দুই দেশের সম্মিলিতভাবে। এটি দেখিয়ে দেয়, ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ প্রতিরোধের কৌশল কেবল সামরিক নয়, বরং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্তরে আরও জোরদার হতে হবে।