
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে চলমান আন্দোলনে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন আলেম সমাজ এবং বিভিন্ন কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনস্থলে পৌঁছে তারা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার‘, ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ‘, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ‘, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ‘—এমন বিভিন্ন স্লোগানে শাহবাগ মোড়কে উত্তাল করে তোলেন।
বিকেল পাঁচটার পর থেকেই শাহবাগ অবরোধে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। নারী, শিশু ও বয়স্কসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতিতে শাহবাগে তৈরি হয় গণজমায়েতের চিত্র। আন্দোলনে দেখা গেছে ধর্মপ্রাণ মানুষদের মুখে ইসলামী স্লোগান এবং চোখেমুখে গণআন্দোলনের প্রত্যয়।
আন্দোলনস্থলে বক্তব্য রাখেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। তিনি বলেন, “আল্লাহর জমিনে জুলুম-ফ্যাসিজম চলবে না। যারা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তাদের শেষ ঘন্টা বেজে গেছে।” এ ছাড়া বক্তৃতা করেন আলোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি কাজী ইব্রাহীম। তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশ ইসলামী আদর্শের দেশ। এখানে মুজিবীয় ফ্যাসিবাদের স্থান নেই।”
আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হেফাজতের নেতাকর্মীরা জনতার মাঝে পানি, স্যালাইন, বিস্কুট ও কলা বিতরণ করেন। গরমে অসুস্থ আন্দোলনকারীদের সেবা দিতেও তাদের ভূমিকা দেখা যায়।
এই জনসমাবেশ ও আন্দোলনে আলেমদের উপস্থিতি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ইসলামী শক্তির এই সংহতি এবং শাহবাগে সরাসরি অবস্থান নেওয়া বর্তমান আন্দোলনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
শাহবাগে বর্তমানে এনসিপি, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ), ইসলামী আন্দোলন, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠন, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন একযোগে অবস্থান করছে। দাবি একটাই—আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, এই আন্দোলন শুধুমাত্র একটি দলবিরোধী অবস্থান নয়, বরং গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও ইসলাম রক্ষার সংগ্রাম হিসেবেই এটি চালিয়ে নেওয়া হবে। শাহবাগে একাত্ম হওয়া হাজারো কণ্ঠে এখন একটাই আওয়াজ—“শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই, আওয়ামী লীগ ব্যান চাই!”