শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
10 বার দেখা হয়েছে

রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীদের জন্য ফ্রি চিকিৎসাসেবা চালু করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। শুক্রবার (৯ মে) রাতে শাহবাগের ট্রাফিক পুলিশ বক্সের সামনে স্থাপন করা হয়েছে এই চিকিৎসা ক্যাম্প।

শিবিরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে শুরু হওয়া এই চিকিৎসা কার্যক্রম চলবে যতক্ষণ আন্দোলন চলবে। ক্যাম্পে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসাসেবা প্রদান করছেন। অনেকে তীব্র গরম, ক্লান্তি ও পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হয়ে এই ক্যাম্পে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পাশাপাশি স্যালাইন, খাবার পানি, ফার্স্ট এইড, ব্যথানাশক ও প্যারাসিটামলসহ প্রাথমিক ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে।

শিবির নেতারা জানান, মানবিক দিক বিবেচনায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে আন্দোলনকারীদের শরীরিক কষ্ট লাঘব করা যায়। আন্দোলনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তিদের তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়াই এই ক্যাম্পের উদ্দেশ্য।

এর আগে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের ঘোষণা দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, “আজ জুমার নামাজের পর ফোয়ারার সামনে জনসমুদ্র তৈরি হবে। আজ সরকার বুঝতে পারবে কারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চায়।”

বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে মিন্টো রোড থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগ অভিমুখে আসে আন্দোলনকারীরা। তারা শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন এবং রাস্তা অবরোধ করেন। আন্দোলনে অংশ নেয় এনসিপি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ), গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ইসলামী আন্দোলন ও কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’, ‘শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’—এই ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার বাংলামোটর অভিমুখ থেকে ঢাকা মহানগর শিবিরের কয়েকশ নেতাকর্মী এসে শাহবাগে যোগ দেন। এ সময় তারা ‘শিবির শিবির’ স্লোগানে মিছিল করেন।

শাহবাগে উপস্থিত আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, “জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগ থেকেই আজকের এই প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশে আর ফ্যাসিবাদ চলবে না। মানুষের রক্তের বদলা রাজপথেই নিতে হবে।”

আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, যতক্ষণ না আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, ততক্ষণ তারা রাজপথ ছাড়বেন না। আন্দোলনের অন্যতম মুখ্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—শেখ হাসিনার বিচারের দাবি, মুজিববাদী সংগঠনের নিষিদ্ধ ঘোষণা ও অন্তর্বর্তী সরকারের পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ব্লকেড শুধু একটি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ নয়, বরং ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে একটি নতুন উত্তাপের সূচনা করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন