বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতির ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত ছাত্রদলের মাসব্যাপী ফরম বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
“২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী, এখনও ছাত্র?”ছাত্রদলের সভাপতি বলেন,
“ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। একজন দীর্ঘদিন আগের শিক্ষার্থী কীভাবে এখনও ছাত্রত্ব ধরে রাখেন? এটা ছাত্র রাজনীতি নয়, এটা ছাত্রত্বের অপব্যবহার।”
তিনি আরও বলেন,
“বাংলাদেশে একটি গোপন বাহিনী আছে, যারা বিশেষ মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। জামায়াতপন্থীরা এখন ছাত্রদলের সমালোচনায় ব্যস্ত, অথচ নিজেদের সংগঠনের নেতাদের শিক্ষাবর্ষ প্রকাশে গড়িমসি করছে।”
ছাত্রলীগ পুনর্বাসনের অভিযোগ ছাত্রশিবির ও গণছাত্র সংসদের বিরুদ্ধে
রাকিব অভিযোগ করেন,
“ছাত্রশিবির বর্তমানে ছাত্রলীগের পুনর্বাসন কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও সেক্রেটারি পূর্বে ছাত্রলীগ করতেন।”
তিনি আরও বলেন,
“বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ এখন ছাত্রলীগের ছাঁটাই কর্মীদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে।”
আহ্বায়ক কমিটির নিষ্ক্রিয়দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
অনুষ্ঠানে রাকিবুল ইসলাম জানান,
“ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে যারা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাদের তালিকা আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ত্যাগী নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করা হবে।”
জবি ছাত্রদলের বক্তব্য: গুম-খুন-নিখোঁজের রাজনীতি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন,
“জবি ছাত্রদলের বহু নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। এখনও অনেক নেতা নিখোঁজ। আমরা জানি, আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবকই ছিলেন জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক।”
সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফীন বলেন,
“যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে উপেক্ষিত হয়েছেন, তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।”
বিতর্কের ঝড়: ছাত্রত্ব নাকি রাজনৈতিক আশ্রয়?
এ বক্তব্য ঘিরে ছাত্র রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে।
- একজন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রায় ১৫ বছর আগের শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হয়ে থাকলে কীভাবে তিনি ছাত্র হিসেবে বৈধতা পান— তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন মহল।
- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ছাত্রত্ব বনাম পদাধিকার বিতর্ক।