ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দা ও মোসাদ কেন্দ্র নিশানায়, জবাবে ইরানের জ্যেষ্ঠ কমান্ডারকে হত্যা করেছে আইডিএফ

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আবারও চরমে। ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) মঙ্গলবার (১৭ জুন) দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক গোয়েন্দাকেন্দ্র ও মোসাদের অপারেশন পরিকল্পনাকেন্দ্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইসরায়েলের উপকূলীয় শহর হার্জলিয়ায় অবস্থিত একটি ‘স্পর্শকাতর’ স্থাপনা। ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলোর বরাতে জানা যায়, ওই শহরে একটি কৌশলগত ও গোপন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। শহরটি মোসাদের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর একটি হিসেবে পরিচিত, যেখানে গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

তাসনিম নিউজে বলা হয়েছে, এই হামলা ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালানো হয়েছে। তবে হামলায় কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করে জানায়নি আইআরজিসি।

এদিকে হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা ইরানের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডারকে হত্যা করেছে। নিহত ওই কর্মকর্তার নাম আলী সাদমানি। আইডিএফ’র ভাষ্যমতে, তিনি ছিলেন ইরানের অন্যতম উচ্চপর্যায়ের সামরিক পরিকল্পনাকারী এবং সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী।

আইডিএফ বিবৃতিতে জানায়, “আলী সাদমানি ইরানের প্রতিরক্ষা নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তিনি বিভিন্ন আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় ও অস্ত্র সরবরাহে জড়িত ছিলেন।”

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বলছেন, ইসরায়েল-ইরান টানাপোড়েন নতুন মাত্রা পেয়েছে। বিশেষ করে গাজা ও লেবানন সীমান্তে চলমান উত্তেজনার পাশাপাশি এমন হামলা-পাল্টা হামলা দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ সংঘাতের শঙ্কা তৈরি করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ বহু বছর ধরে চলছে। তবে সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো সরাসরি সামরিক হামলার রূপ নিচ্ছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আরও হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

ইসরায়েল সরকার ও সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত হার্জলিয়ায় হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে তারা।