শহীদ পরিবারের পাশে ঈদের দিনে—ইসলামী ছাত্রশিবির, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখা

ঈদুল আজহার পবিত্র দিনে ইসলামী ছাত্রশিবির, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখা স্মরণ করেছে দেশের বীর শহীদ ও গাজীদের। তাদের আত্মত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে শহীদ ও গাজী পরিবারের মাঝে ঈদ শুভেচ্ছা ও উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

ঐতিহাসিক জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং ঈদের আনন্দের অংশীদার করতে ছাত্রশিবিরের সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েন। ঈদের দিন সকাল থেকেই দায়িত্বশীল ও সাথীরা ছুটে চলেন শহীদ পরিবারের দরজায় দরজায়। ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, জামালপুর, নীলফামারী, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী এবং গাইবান্ধার প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতেও পৌঁছে দেওয়া হয় কুরবানির পশুর মাংস ও ঈদের উপহারসামগ্রী।

শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে তাদের খোঁজখবর নেওয়া, স্মৃতিচারণে অংশ নেওয়া এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়া হয়। এ সময় আবেগঘন পরিবেশে অনেকেই অশ্রুসিক্ত হন।

এ বিষয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি শাখার একজন দায়িত্বশীল বলেন, “শহীদদের রক্তের ঋণ আমাদের জন্য চিরদিনের দায়। ঈদের আনন্দ তাদের পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়া আমাদের ঈমানি দায়িত্ব। এটা শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ থেকে উৎসারিত একটি চেষ্টামাত্র।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আজকে শহীদ আহনাফ আবির, শহীদ শাকিল পারভেজ, শহীদ সাজ্জাদ হোসাইন সজল, শহীদ সেলিম তালুকদার, শহীদ রাব্বি মিয়া, শহীদ রাকিব হোসাইন, শহীদ রাসেল মাহমুদ, শহীদ মো. সাজ্জাদ, শহীদ তাহমিদ আব্দুল্লাহ, শহীদ আসিফ ইকবালসহ সকল শহীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। ঈদের উপহার গ্রহণের সময় তাদের চোখেমুখে যে ভালোবাসা ও দোয়ার ঝলক ছিল, তা আমাদের চলার পথে এক বিশাল অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।”

এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিশুদের জন্য ছিল মিষ্টি ও খেলনা, বয়স্কদের জন্য ছিল প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ পোষাক। শহীদ পরিবারের সদস্যরা এই শুভেচ্ছা ও উপহার পেয়ে আনন্দিত হন এবং ছাত্রশিবিরের এই উদ্যোগকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে গ্রহণ করেন।

শহীদ সাজ্জাদের মা বলেন, “ছেলের কথা মনে হলে আজও বুকটা কেঁপে ওঠে। ঈদের দিনে ওর শূন্যতা আরও বেশি অনুভব করি। কিন্তু আজ ছাত্রশিবিরের ভাইয়েরা এসে আমাদের যে সম্মান দিয়েছে, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।”

শহীদ পরিবারের প্রতি ছাত্রশিবিরের এই ভালোবাসা নিছক ঈদকেন্দ্রিক নয়, বরং এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির অংশ। ভবিষ্যতেও এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, শহীদদের আত্মত্যাগ দেশের জন্য এক মহান চেতনার উৎস। তাদের রেখে যাওয়া পরিবারগুলো আমাদের দায়িত্ব ও ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু। ঈদের এই মহামিলনে শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আমরা নতুন করে প্রতিজ্ঞা করছি, শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। ইন শা আল্লাহ, শহীদদের রক্তের ঋণ পূরণে আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সংগ্রাম চালিয়ে যাব।

শেষে তারা আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন—“আল্লাহ যেন শহীদদের জান্নাতের সর্বোচ্চ মাকাম দান করেন এবং আমাদের এই সামান্য প্রয়াস কবুল করে নেন।”

আল্লাহু আকবার! ঈদ মোবারক!