আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা বাড়ছে। এমন সময়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে দেশের কয়েকজন শীর্ষ রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, তিনি খুব শিগগিরই জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে পারেন। ধারণা করা হচ্ছে, সেই ভাষণে নির্বাচন ঘিরে একটি সুস্পষ্ট রূপরেখা উঠে আসতে পারে।
তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতভেদও রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, ভাষণে নির্বাচনের সময়সূচি বা নির্দিষ্ট দিনক্ষণ নাও থাকতে পারে, যেহেতু তা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ড. ইউনূস তার অবস্থান স্পষ্ট করতে শিগগিরই জাতির সামনে আসতে পারেন। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “আমি মনে করি অধ্যাপক ইউনূস নির্বাচন সম্পর্কে রূপরেখা দেবেন। নির্বাচনের একটি পথনির্দেশনা দিতে পারেন। এছাড়া এই সময়ে জাতির সামনে আসার যুক্তি দেখা যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যদি ক্ষমতায় থেকে নির্বাচন পরিচালনা করেন, তবে তা গণতন্ত্রের বিকাশের জন্য মঙ্গলজনক হবে।”
এদিকে বিএনপির একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা হয়তো নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন না। তবে দলটির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, তিনি জাতিকে একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনা হতে পারে।
উল্লেখযোগ্য যে, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশের মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি অব্যাহত রয়েছে।
সূত্র মতে, ঈদের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস একটি রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে যেতে পারেন। ওই সফরে তার কয়েকজন প্রবাসী রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করার সম্ভাবনাও রয়েছে, যা আগামী দিনের রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
নির্বাচন নিয়ে যখন দেশে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে, তখন প্রধান উপদেষ্টার সম্ভাব্য ভাষণ রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন গতি আনতে পারে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—ড. ইউনূস কবে, কোথা থেকে ও কী বলবেন, সেটাই এখন জাতির কৌতূহলের কেন্দ্রে।