চাঁদপুরের অর্ধশত গ্রামে সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে শুক্রবার ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে আগামীকাল শুক্রবার (৬ জুন) চাঁদপুরের অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। জেলার হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব, কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার শত শত ধর্মপ্রাণ মুসলমান প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ইতোমধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশে ঈদ উদযাপনের অপেক্ষায় রয়েছেন।

প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফ মাঠে সকাল ৮টায়। এ জামাতে ইমামতি করবেন দরবার শরীফের বর্তমান পীর মুফতি আল্লামা যাকারিয়া চৌধুরী আল মাদানী। এছাড়া সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৮টায় ঈদের আরেকটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ইমামতি করবেন দরবার শরীফের পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী।

দরবার শরীফ সূত্রে জানা গেছে, আরব দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে চাঁদপুরে আগাম ঈদ উদযাপনের এই ধারাটি শুরু হয়েছিল ১৯২৮ সালে। সেই সময় দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মাওলানা ইসহাক চৌধুরী (রহ.) সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপনের রীতি চালু করেন। প্রায় ৯৭ বছর ধরে এই প্রথা অনুসরণ করে আসছেন তার অনুসারীরা। বর্তমানে প্রায় ২ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান এই ধারার অনুসরণে আগাম ঈদুল আজহা পালন করে থাকেন।

পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী বলেন, “আমরা শুধুমাত্র সৌদি আরব নয়, কোরআন ও হাদীসের নির্দেশনার আলোকে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করি। এতে করে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে আমাদের ঈমানি সংহতি বজায় থাকে।”

আগাম ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে কোরবানির পশু ক্রয়সহ যাবতীয় আনুষঙ্গিক কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মুসল্লিরা ঈদের জামাত ও কোরবানির জন্য প্রস্তুত। সাদ্রা দরবার শরীফ ছাড়াও জেলার অন্যান্য মসজিদ ও ঈদগাহে সকাল থেকে জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

যেসব গ্রামে আগাম ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে তার মধ্যে রয়েছে:
হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপপুর, বাসারা;
ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর;
মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী;
এছাড়া কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার কয়েকটি গ্রামেও আগাম ঈদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদের নামাজ ও কোরবানি নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর থাকবে বলে জানা গেছে।

প্রতি বছরের মতো এবারও চাঁদপুরে আগাম ঈদ উদযাপনের বিষয়টি জাতীয়ভাবে আলোচনায় এসেছে। অনেকেই এটিকে ইসলামী ঐক্যের নিদর্শন ও ধর্মীয় চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত অভিব্যক্তি হিসেবে দেখছেন।