ইসরাইলের কট্টরপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির সম্প্রতি দেশটির মসজিদগুলোতে মাইকে আজান দেওয়া নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আজানকে ‘শব্দদূষণ’ আখ্যা দিয়ে তিনি পুলিশ প্রশাসনকে মসজিদে অভিযান চালিয়ে লাউডস্পিকার জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ।
রোববার (২ জুন) এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বেন-গাভির বলেন,
“আমি তোমাদের নিয়োগ দিয়েছি আমার নীতি বাস্তবায়নের জন্য।”
বিতর্কিত নীতির বাস্তবায়ন
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বেন-গাভির প্রথমবারের মতো মসজিদে মাইকে আজান নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন। তখন থেকেই এক বিতর্কিত নীতি চালু হয়, যার আওতায় পুলিশ চাইলে যে কোনো সময় মসজিদে প্রবেশ করে আজানের লাউডস্পিকার জব্দ করতে পারে।
বৈঠকে বেন-গাভির অভিযোগ করেন, বেশিরভাগ পুলিশ কর্মকর্তা এই নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করছেন না। এমনকি জরিমানা আরোপেও গাফিলতি দেখা গেছে। তবে কেন্দ্রীয় জেলার পুলিশ প্রধান যে মসজিদের বিরুদ্ধে জরিমানা আরোপ করেছেন, তার প্রশংসা করেছেন তিনি।
মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ
এ নির্দেশনার বিরুদ্ধে আরব ও মিশ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কয়েকজন জেলা পুলিশ কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনের কঠোর নির্দেশনা সামাজিক উত্তেজনা ও সংঘর্ষ ডেকে আনতে পারে।
হামাসের তীব্র নিন্দা
ইসরাইলি সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এক বিবৃতিতে তারা বলেন,
“এটি মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি চরম অবমাননা এবং ধর্মীয় অধিকারের ওপর প্রকাশ্য আগ্রাসন।”
তারা আরও জানান, ইসরাইলের সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের ধর্মীয় স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা ও নিপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের পদক্ষেপ ক্ষোভ আরও বাড়াবে এবং নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে।
ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নিষেধাজ্ঞা আন্তর্জাতিকভাবে ইসরাইলের প্রতি মুসলিম বিশ্বের ক্ষোভ বাড়াতে পারে। এটি কেবল ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন নয়, বরং জাতিগত বৈষম্যের প্রকাশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মুসলিম দেশগুলো বিষয়টি জাতিসংঘ ও ওআইসি-তে তুলতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন। ধর্মীয় অধিকারের এমন প্রকাশ্য লঙ্ঘন মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।