কানাডার পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে। দাবানলের ভয়াবহতা ও ব্যাপকতার কারণে প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সামরিক বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন এবং জরুরি সাড়া প্রদানের লক্ষ্যে ফেডারেল ইনসিডেন্ট রেসপন্স গ্রুপকে তলব করেছেন।
দাবানলের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ম্যানিটোবা, সাসকাচোয়ান ও আলবার্টা—এই তিনটি প্রদেশ। সরকারি তথ্যানুসারে, শুধু ম্যানিটোবাতেই ১৭ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাসকাচোয়ানে ৮ হাজার এবং আলবার্টায় প্রায় ১,৩০০ জন মানুষ দাবানলের কবলে পড়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
রোববার (১ জুন) কানাডিয়ান ইন্টারএজেন্সি ফরেস্ট ফায়ার সেন্টার (CIFFC) জানিয়েছে, বর্তমানে ১৮৭টি স্থানে দাবানল চলছে, যার মধ্যে ৯৭টি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় বিমানযোগে মানুষ সরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্নি বলেন, “দাবানল কানাডাজুড়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি আমরা সামরিক ও মানবিক সহায়তা জোরদার করছি। রেড ক্রসের জন্য অনুদানও বৃদ্ধি করা হচ্ছে।”
অস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপন ও মার্কিন সহায়তা
দাবানল-আক্রান্ত অঞ্চলগুলোতে জরুরি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ম্যানিটোবায় খোলা এসব কেন্দ্রের মধ্যে মার্কিন সীমান্ত থেকে মাত্র ১২ মাইল দূরের উইঙ্কলার শহরেও একটি কেন্দ্র চালু হয়েছে। ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণমুখেও। ইতোমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ মধ্য-পশ্চিম ও গ্রেট লেক অঞ্চলে বায়ু দূষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন কৃষি বিভাগ (USDA) আলবার্টায় সহায়তা প্রদানে একটি বিমান ট্যাঙ্কার ও ১৫০ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মী পাঠিয়েছে। দুই দেশের এই সমন্বিত প্রচেষ্টা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দাবানলের কারণ মূলত দীর্ঘদিনের খরা, অস্বাভাবিক উষ্ণ আবহাওয়া এবং শক্তিশালী বাতাস। এ ধরনের দাবানল শুধু কানাডার জন্য নয়, পুরো উত্তর আমেরিকার জন্য একটি পরিবেশগত হুমকি হয়ে উঠছে।