বন্যা পরিস্থিতির অবনতি: সিলেট-ময়মনসিংহসহ পাঁচ জেলায় ঝুঁকি বাড়ছে

সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অন্তত আটটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। মঙ্গলবার (৩ জুন) এসব নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এতে করে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনার কিছু এলাকায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার (২ জুন) প্রকাশিত পূর্বাভাসে বলা হয়, সিলেট জেলার সুরমা ও কুশিয়ারা নদী এবং মৌলভীবাজার জেলার মনু নদীর পানি ইতোমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই নদীগুলোর পাশাপাশি খোয়াই, সারি, গোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই ও সোমেশ্বরী নদীর পানি আরও বাড়তে পারে এবং কয়েকটি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় অংশে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বৃষ্টির ধারা অব্যাহত থাকলে পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানিও বাড়ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এসব নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। দ্বিতীয় দিনে পানি সমতল স্থিতিশীল থাকবে এবং পরবর্তী দিনে হ্রাস পেতে পারে। মুহুরী, ফেনী ও হালদা নদীর পানি সতর্কসীমার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, দেশের অন্যতম বড় দুটি নদী ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানিও বাড়ছে। তবে এখনো তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই প্রবণতা আগামী ৪ দিন অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর নদ-নদীগুলোর পানি কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

অন্যদিকে, গঙ্গা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং পদ্মা নদীর পানি ধীরে ধীরে কমছে। আগামী পাঁচ দিন গঙ্গার পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পদ্মার পানি কিছুটা বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচেই থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যেসব এলাকায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে, সেখানে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং নদীতীরবর্তী জনগণকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সতর্কতা:
যেসব অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, বিশেষ করে সিলেট, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী বাসিন্দাদের স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।