বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সংগঠক সাদিক কায়েম বলেছেন, “জামায়াতে ইসলামই ছিল এই দেশে ফ্যাসিবাদের প্রথম শিকার।” রোববার (১ জুন) সকালে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের রায় বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়ের পর এক ফেসবুক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাদিক কায়েম বলেন, “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মিথ্যা মামলায় একের পর এক জামায়াতসহ বিরোধী দলীয় নেতাদের বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এখানেই ক্ষান্ত হয়নি, ফরমায়েশি রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে শত শত মানুষ হত্যা করেছে পতিত ফ্যাসিবাদ।”
তিনি দাবি করেন, সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরুষদের আটক, গুম, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে এবং মুসলিমা নারীদের ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মতো ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনাগুলো মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সাদিক কায়েম আরও বলেন, “ইসলামী আদর্শকে জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে ধ্বংস করতে ব্যর্থ হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে। সেই স্বৈরাচারের পথ ধরে এক দশক আগে জামায়াতের রাজনৈতিক অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।”
তবে তিনি রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আজ জামায়াতে ইসলামি পুনরায় নিবন্ধন ফিরে পেয়েছে। ক’দিন আগেই মুক্ত হয়েছেন এটিএম আজহারুল ইসলাম, যাকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এসব কিছু আল্লাহর দয়া ও রহমতের নিদর্শন।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, “জামায়াতে ইসলামি এই বার্তা বুঝে সামনে এগিয়ে যাবে এবং ইকামতে দ্বীনের আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে।”
এই পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “যারা ইসলাম, জামায়াত, খিলাফত কিংবা ছাত্রশিবিরের নামে কাজ করেন, তারা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের দ্বীন ও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতে ইসলামির নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার পর তাদের রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত হওয়ার নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিতও মিলছে।
এদিকে জামায়াত সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অতীতের নানা অভিযোগ ও মামলার প্রসঙ্গ তুলে নানা মহল থেকে এই রায়ের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশও শুরু হয়েছে। যদিও দলটি বলছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও চক্রান্তের শিকার হয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল।সাদিক কায়েমের বক্তব্য ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।