“জুলাইয়ের গাদ্দারদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না” — শিবিরনেতা সাদিক কাইয়ুম

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
23 বার দেখা হয়েছে

জুলাই বিপ্লবের সময়কার বিভাজন এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাদিক কাইয়ুম। তিনি বলেছেন, “জুলাইয়ের গাদ্দারদের ইতিহাস ক্ষমা করবে না।”

বৃহস্পতিবার (২২ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই মন্তব্য করেন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক টানাপড়েন ও ঐক্যবিরোধী অবস্থান প্রসঙ্গে পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সাদিক কাইয়ুম তার পোস্টে লেখেন, “ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান—সব ধরনের মান, অভিমান ও ক্ষোভ পাশ কাটিয়ে, জাতীয় স্বার্থে এখনই দূরদর্শী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের গাদ্দারদের বলতে চাই—ইতিহাস তোমাদের ক্ষমা করবে না। জুলাইয়ের প্রধান শক্তিগুলোর বিভাজন সৃষ্টির দায় তোমাদেরই।”

পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, “জুলাই বিপ্লবের শক্তিগুলোর পিঠে ছুরি মেরে তোমরা মূলত দেশকে ছুরিকাঘাতে আহত ও রক্তাক্ত করেছো।”

এরপর জাতির উদ্দেশে একটি আহ্বান জানিয়ে সাদিক বলেন, “এই মুহূর্তে বলব, সবাই যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করুন। দ্বিধা নয়—এই লড়াই দেশ ও জনগণের জন্য। আল্লাহ যেন এই জাতিকে সাহায্য করেন এবং সকল ধরনের ক্ষতি ও ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন। আমিন।”

তবে সাদিক কাইয়ুম তার পোস্টে কারো নাম উল্লেখ না করলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি মূলত জুলাই বিপ্লবের সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের অংশ থাকা কিছু রাজনৈতিক বা ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ করেই এ মন্তব্য করেছেন, যারা পরবর্তীতে বিভাজনের পথে হেঁটেছেন।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই মাসে দেশে বড় পরিসরে একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ছাত্র, যুব ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা ঐক্যজোটটি কিছুদিনের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যে দুর্বল হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আবারো এই ঐক্যের ভাঙন এবং নেতৃত্বের মধ্যে বিভেদ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।

সাদিক কাইয়ুমের বক্তব্য সেই পটভূমিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার এই পোস্টকে কেউ কেউ সাহসী ও সময়োপযোগী বললেও, অনেকে এটিকে ইঙ্গিতপূর্ণ ও উত্তেজনা সৃষ্টিকারী মন্তব্য বলেও দেখছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কেউ প্রশ্ন তুলছেন—কাকে “গাদ্দার” বলা হচ্ছে? আবার কেউ বলছেন—এই বক্তব্য হয়তো ঐক্য পুনর্গঠনের আহ্বান হিসেবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে, তবে শব্দচয়নে আরও সতর্ক হওয়া দরকার ছিল।

রাজনৈতিক অঙ্গনের অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান সময়েই সবচেয়ে বেশি দরকার দায়িত্বশীল নেতৃত্ব ও সহনশীল রাজনৈতিক আচরণ। বিভাজনের বদলে ঐক্য এবং আস্থা পুনঃস্থাপনই হতে পারে সংকট উত্তরণের পথ।

নিউজটি শেয়ার করুন