
নারী নির্যাতন মামলায় আলোচিত সংগীতশিল্পী মাঈনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় তার বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান জানান, গতকাল সোমবার রাতে ভুক্তভোগী নারী নিজেই বাদী হয়ে ডেমরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর-৩২)। অভিযোগে বলা হয়, নোবেল তাকে অপহরণ করে জিম্মি অবস্থায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত সাত মাস ধরে একাধিকবার ধর্ষণ করে আসছিলেন। এ ঘটনায় দ্রুত অভিযান চালিয়ে রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী নারী রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী। ঘটনার শিকার হওয়ার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (OCC) পাঠানো হয়। সেখানে তার চিকিৎসা ও কাউন্সেলিং চলছে।
ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা দ্রুত মামলা গ্রহণ করি এবং অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনতে তৎপর হই। রাতেই তাকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।”
এদিকে, নোবেলের বিরুদ্ধে এর আগেও বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও মামলার অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালে প্রতারণার একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সেবার অভিযোগ ছিল, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার চুক্তি করে তা না পালন করায় তিনি প্রতারণা করেছেন।
মাঈনুল আহসান নোবেল মূলত ভারতের ‘সা রে গা মা পা’ রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করে আলোচনায় আসেন। পরে বাংলাদেশে কিছু জনপ্রিয় গান পরিবেশন করে তরুণ শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয়তা পান। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি নানা বিতর্কে জড়ান এবং সামাজিক মাধ্যমে উগ্র মন্তব্য, অশালীন আচরণ ও মাদকাসক্তির অভিযোগে সমালোচিত হন।
সর্বশেষ নারী নির্যাতনের এই মামলাটি তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে রাজি হয়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড।