‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবি

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
24 বার দেখা হয়েছে

প্রস্তাবিত ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ গঠনের পরিকল্পনা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে তারা সরকারের কাছে মেনে নেওয়া ছয় দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কলেজের ছাত্র সংসদ ভবনের সামনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি একটি “রাষ্ট্র ও শিক্ষা সিন্ডিকেটের প্রেসক্রিপশন”, যা তিতুমীর কলেজের স্বতন্ত্র স্বীকৃতি ও দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষা করে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা। তারা উল্লেখ করেন, এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে তা হবে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।

লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২৩ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে হাজারো ছাত্র-জনতা অংশ নিয়েছিল, যেখানে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী শহীদ মামুন জীবন দিয়েছেন। তার রক্তের বিনিময়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের কাছেই তারা কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবি নতুন করে উপস্থাপন করেছেন।

তারা আরও জানান, ২০২৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে ৯৪ পৃষ্ঠার একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়, যেখানে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার যৌক্তিকতা ও সম্ভাব্য ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরা হয়। যদিও প্রতিবেদনটি গৃহীত হয়েছিল, পরে সেটি “হারিয়ে গেছে” বলে জানানো হয়, যা শিক্ষার্থীদের মতে অত্যন্ত দায়িত্বহীন এবং প্রহসনমূলক আচরণ।

এ ছাড়া, ৩ ডিসেম্বর গঠিত পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট যাচাই কমিটির রিপোর্ট আজও প্রকাশ করা হয়নি। বরং ২৯ ডিসেম্বর একটি নতুন কমিটি গঠন করে সাতটি সরকারি কলেজকে একত্র করে ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ গঠনের প্রস্তাব সামনে আনা হয়। শিক্ষার্থীরা এটিকে জনমত উপেক্ষা করে গৃহীত সিদ্ধান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেন।

তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, তারা রাষ্ট্রের প্রতি সম্মান রেখেই নতুন কমিটিতে অংশ নিয়েছেন এবং ২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি ইউজিসিতে ২২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবিগুলো যুক্তি সহকারে উপস্থাপন করে। পরে, ৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের সাত দফার ছয়টি দাবি সরকারিভাবে মেনে নেওয়া হয় এবং এক সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হলেও এখনো তার কোনো বাস্তব অগ্রগতি নেই।

সরকারের মেনে নেওয়া ছয় দফা দাবি হলো:

  1. সরকারি তিতুমীর কলেজের জন্য স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামো গঠন করে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি কার্যক্রম শুরু
  2. স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য জমি বরাদ্দ
  3. আবাসন সংকট নিরসন
  4. শিক্ষক সংকট সমাধান
  5. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার ও গ্রন্থাগার নির্মাণ
  6. সহশিক্ষা ও গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা

সংবাদ সম্মেলনের শেষাংশে শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের বদলে যদি প্রহসনের পথে হাঁটা হয়, তাহলে আমরা আর চুপ থাকব না। প্রয়োজনে বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাব।”

নিউজটি শেয়ার করুন