নগর ভবন দখল করে আন্দোলন: “আইনি প্রক্রিয়া উপেক্ষিত”, বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
25 বার দেখা হয়েছে

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।

সোমবার (১৯ মে) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, “বিএনপি গায়ের জোরে নগর ভবন বন্ধ করে আন্দোলন করছে”, যা জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে এবং সিটি কর্পোরেশনের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত করছে।

তিনি তার পোস্টে বিষয়টির পেছনের একাধিক আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতার কথা তুলে ধরেন:

প্রথমত, হাইকোর্ট একটি রায়ে বলেছে, সংশোধিত আর্জি অবৈধ। অথচ নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনাল সেই রায় অগ্রাহ্য করে রায় দিয়েছে।
দ্বিতীয়ত, নির্বাচন কমিশন এই মামলার শুনানিতে অংশ নেয়নি, ফলে একপাক্ষিক রায় হয়েছে। পরবর্তীতে তারা এ বিষয়ে কোনো আপিলও করেনি।
তৃতীয়ত, আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত না নিয়েই এবং দুইজন নাগরিকের পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ উপেক্ষা করে রাত ১০টায় নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে।
চতুর্থত, মামলায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো পক্ষ ছিল না, এবং রায়েও তাদের প্রতি কোনো নির্দেশনা নেই।
পঞ্চমত, শপথ না দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সরকার বিভাগকে বিবাদী করে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে, যা বর্তমানে বিচারাধীন।
ষষ্ঠত, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সংক্রান্ত অনুরূপ মামলায় হাইকোর্টের রায় মেনে ট্রাইব্যুনাল আবেদন খারিজ করেছে। সেখানে আর এখানে ভিন্ন সিদ্ধান্ত আসা বিস্ময়কর।
সপ্তমত, মেয়রের মেয়াদ নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে— আদৌ মেয়াদ আছে কি না, তা পরিষ্কার নয়।
অষ্টমত, নির্বাচন কমিশনের দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে— “কোনো প্রকার আইনি জটিলতা না থাকলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।” অথচ এখানে একাধিক জটিলতা বিদ্যমান।
নবমত, এসব জটিলতা নিরসনে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে।
দশমত, আওয়ামী আমলের যেসব নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন আছে, সেগুলো বৈধ বলে মেনে নিলে এই ধরনের জটিলতা তৈরি হতো না।

আসিফ মাহমুদ বলেন, “উচ্চ আদালতে বিচারাধীন এসব বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শপথ গ্রহণ সম্ভব নয়। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বরং গায়ের জোরে নগর ভবন দখল করে আন্দোলনের মাধ্যমে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে বিএনপি।”

তিনি আরও দাবি করেন, এই আন্দোলন সাধারণ জনগণের নয়, বরং বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন গ্রুপের নির্দেশনায় দলীয় নেতাকর্মীরাই কর্মসূচি পালন করছেন— যা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যেও উঠে এসেছে।

পোস্টের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, “এসব জটিলতা নিরসন হলে স্থানীয় সরকার বিভাগের শপথ দিতে কোনো আপত্তি থাকবে না। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার বিরুদ্ধে ইশরাক হোসেনের এই আক্রমণাত্মক ও অপমানজনক কার্যকলাপের কোনো কারণ খুঁজে পাই না।”

উল্লেখ্য, ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে নগর ভবনের সামনে কয়েকদিন ধরে বিএনপির পক্ষ থেকে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ফলে নগর ভবনের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন