ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) লাগাতার হামলায় রক্তাক্ত হয়ে উঠেছে প্রতিটি গলি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছেন ২৭ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৮৭ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু মানুষ চাপা পড়ে আছেন, ফলে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার পর ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে। এর পর থেকে গত ১৫ মাসে মোট ৫০ হাজার ৬০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ৬৩ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে অন্তত ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের আহ্বানে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও তা স্থায়ী হয়নি। গত ১৮ মার্চ থেকে আইডিএফ আবারও পূর্ণমাত্রায় গাজায় হামলা শুরু করে। দ্বিতীয় দফার এই অভিযানে দুই মাসে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৬৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৩০৮ জন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। ইসরায়েল দাবি করছে, এখনও প্রায় ৩৫ জন জিম্মি জীবিত রয়েছেন এবং তাদের উদ্ধার করতে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাওয়া হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট করে দিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি নিঃশেষ এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত গাজায় হামলা অব্যাহত থাকবে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বহুবার ইসরায়েলকে সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসেও (আইসিজে) ইতোমধ্যে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। তবে যুদ্ধ থামাতে নেতানিয়াহু প্রশাসনের মধ্যে কোনো আন্তরিকতা দেখা যাচ্ছে না।
গাজায় যে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ঘটছে, তা বিশ্ববাসীর বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। ধ্বংস, মৃত্যু আর নিঃস্ব মানুষের দীর্ঘ শোকগাথা যেন এক জ্বলন্ত প্রশ্ন হয়ে উঠেছে— বিশ্ব কি কেবল নিরব দর্শক হিসেবেই থাকবে?
নিউজমার্ট ২৪- কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা থেকে প্রকাশিত | ইমেইলঃ press.newsmart24@gmail.com
স্বত্ব ©২০২৫ newsmart24