পিএসএলে ড্রোন হামলার ধাক্কা: রাওয়ালপিন্ডিতে ম্যাচ স্থগিত, বিদেশি ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ

প্রতিবেদক নিউজমার্ট ডেস্ক
2 বার দেখা হয়েছে

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) চলতি আসর পড়েছে চরম নিরাপত্তা শঙ্কায়। আজ বৃহস্পতিবার রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশেই ভারতের ড্রোন হামলার ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ক্রিকেটাঙ্গনে। ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) তাৎক্ষণিকভাবে আজকের করাচি কিংস বনাম পেশোয়ার জালমির ম্যাচ ভেন্যু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ম্যাচটি সম্পূর্ণ স্থগিত করে দেওয়া হয়।

আজকের ম্যাচে পেশোয়ার জালমির হয়ে খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের তরুণ পেসার নাহিদ রানার। স্থানীয় সময় সকালেই স্টেডিয়ামের পাশে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, এটি ছিল একটি ড্রোন হামলা, যা ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে পুরো পিএসএল আয়োজনের ওপর।

পিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, এই হামলার পরে বিদেশি ক্রিকেটারদের সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) পক্ষ থেকেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে পাকিস্তানে থাকা বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার—নাহিদ রানা ও রিশাদ হোসেনের সঙ্গে। টুর্নামেন্ট আয়োজকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চার্টার্ড ফ্লাইটের মাধ্যমে বিদেশিদের দুবাই পৌঁছে দেওয়া হবে, সেখান থেকে যার যার দেশের বিমান ধরবেন তাঁরা।

তবে ঠিক কবে নাগাদ নাহিদ ও রিশাদ বাংলাদেশে ফিরবেন, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় জানায়নি বিসিবি। বিষয়টি নিরাপত্তা ও ভ্রমণসুবিধা বিবেচনায় নির্ধারিত হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে, গোটা পিএসএল আয়োজন নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ‘ক্রিকবাজ’ জানায়, শুধু রাওয়ালপিন্ডি নয়, লাহোর থেকেও ম্যাচগুলো সরিয়ে নেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এমনকি পুরো আসরই পাকিস্তান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত বা কাতারে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে দুবাই ও দোহা—এই দুটি শহরের নাম উঠে আসছে বিকল্প ভেন্যু হিসেবে।

জিও সুপার নামে একটি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পিএসএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মালিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসে পিসিবি। সেখানে শুধু চলমান পিএসএল নয়, বাংলাদেশের বিপক্ষে আসন্ন টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে সিরিজ নিয়েও সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।

পিসিবি জানিয়েছে, পিএসএলের বাকি ১০টি ম্যাচ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে, তবে সেটি নির্ভর করছে লজিস্টিক সরঞ্জাম এবং স্টেডিয়াম ব্যবস্থাপনার ওপর। পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুতই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।

এভাবে ভারতের ড্রোন হামলার প্রেক্ষাপটে ক্রিকেট শুধু খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং বড় ধরনের কূটনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত সংকটেও পরিণত হচ্ছে। পিএসএলের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এখন নিরাপত্তা অগ্রাধিকার এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সামর্থ্যের ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন