
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের দেশত্যাগকে “অন্তর্বর্তী সরকারের চরম ব্যর্থতা” বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব শেষে নয় মাস দেশে ছিলেন। এখন তিনি দেশ ছাড়লেন—এটা পালানো, না পালাতে দেওয়া হয়েছে, সেটি প্রশ্ন।”
বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় বার আউলিয়া মাজারে বার্ষিক ওরস শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সারজিস আলম আরও বলেন, “রাষ্ট্রপতি হিসেবে তিনি সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে বহু কিছু করেছেন যার প্রমাণ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে। এখন তিনি পালিয়ে গেলেন। এ ঘটনা ড. ইউনূস ও ড. আসিফ নজরুলকেও জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।”
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধাবস্থায় গেলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ। উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর এবং মাঝে মাঝে ধর্মীয় দিক থেকেও মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায়। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উগ্র সাম্প্রদায়িক মনোভাব উদ্বেগজনক।”
দেশের রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, “পূর্ণাঙ্গ সংস্কার এক-দেড় বছরে সম্ভব না হলেও মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা আমরা জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেছি। স্বচ্ছ নির্বাচন, নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরপেক্ষ ভূমিকা—এই মৌলিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হলে ডিসেম্বর, মার্চ বা জুন—যেকোনো সময় নির্বাচন হতে পারে, আমাদের আপত্তি নেই।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বর্তমানে সবচেয়ে ভয়ংকর রাজনৈতিক হাতিয়ার হয়ে উঠেছে মিথ্যা মামলা। “আমরা চাই অপরাধীদের বিচার হোক, কিন্তু নিরপরাধদের হয়রানি নয়। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির নামে মামলা হলে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে এই সরকারের পার্থক্য কোথায় থাকবে?” তিনি দাবি করেন, মিথ্যা মামলায় নাম না দেওয়ার এবং পরে নাম কাটানোর জন্য ঘুষ নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।