ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাত শুধু এ দুটি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এর বিরূপ প্রভাব পড়বে আশপাশের দেশগুলোর উপরও—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তা এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। বুধবার (৭ মে) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “যুদ্ধ লাগলে সংশ্লিষ্ট দেশের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোও নানা দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের মতো অর্থনীতিনির্ভর, আমদানি-নির্ভর দেশগুলোর জন্য এটা বড় ধরনের ধাক্কা হতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সুতা, কাপড়সহ বিভিন্ন কাঁচামাল মূলত প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেই আমদানি করতে হয়। যদি যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে সেই সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়বে, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে তৈরি পোশাকসহ পুরো রপ্তানিমুখী শিল্পখাতে।”
উল্লেখ্য, কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দুই সপ্তাহের মাথায় বুধবার মধ্যরাতে পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরের অন্তত ৯টি স্থানে হামলা চালায় ভারতীয় সামরিক বাহিনী। ভারতীয় সূত্রের দাবি, এই অভিযানে ২৫ মিনিটের মধ্যে মোট ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয় এবং এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হন। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এতে ভারত-শাসিত কাশ্মিরে অন্তত ১৫ জন নিহত এবং ৩০ জনের বেশি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে এবং সেনাবাহিনীকে ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার অনুমতি দেয়।
এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকারও। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ সরকার ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছে। আমরা এমন কোনো পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকতে বলছি যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করতে পারে।”
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত পুরো অঞ্চলজুড়েই নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
নিউজমার্ট ২৪- কাজীপাড়া, মিরপুর, ঢাকা থেকে প্রকাশিত | ইমেইলঃ press.newsmart24@gmail.com
স্বত্ব ©২০২৫ newsmart24