
আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ এনে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবিতে ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণকারী বিভিন্ন মতাদর্শের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন নিয়ে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে নতুন একটি জাতীয় জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। মঙ্গলবার (৬ মে) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই জোটের ঘোষণা দেওয়া হয়।
জোটটির অন্যতম উদ্যোক্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবি জুবায়ের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের অপশাসনের অবসান হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম নতুন বাংলাদেশে বৈষম্য থাকবে না, পরিবর্তন আসবে। কিন্তু এত বড় অভ্যুত্থানের পরও কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসেনি। যারা আমাদের উপর গণহত্যা চালিয়েছিল, তাদের বিচার হয়নি। অনেককে এখনও প্রকাশ্যে মিছিল করতে দেখা যায়, অথচ আমাদের আহত ভাইয়েরা হাসপাতালে কাতরাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে আসছি। এখন থেকে আমরা আর আলাদা আলাদা নয়, একসঙ্গে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লড়াই করব। একসঙ্গে লড়াই করে গণহত্যার বিচার করে ছাড়ব।’
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোটের আরেক উদ্যোক্তা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৫ বছরের দমন-পীড়ন, দুর্নীতি, লুটপাট ও গণতন্ত্র হরণের বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ জনতার অভূতপূর্ব জাগরণে সংগঠিত হয়েছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। এই অভ্যুত্থানে দুই হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। কিন্তু ৮ মাস পার হয়ে গেলেও গণহত্যার বিচারপ্রক্রিয়া অনিশ্চিত। বরং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহল আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই বাস্তবতা উপলব্ধি করেই আমরা আজ “জুলাই ঐক্য” নামে জাতীয় জোটের ঘোষণা দিচ্ছি। আমাদের মূল ও একমাত্র দাবি—জুলাই বিপ্লবের অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং ২০২৪ সালের গণহত্যা, শাপলা ট্র্যাজেডি, পিলখানা ট্র্যাজেডি, গুম, খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরের সকল অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৩৭টি সংগঠন এই জোটের সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, আর্থ বাংলাদেশ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি দলের মতো সংগঠনগুলো এর মধ্যে রয়েছে। এবি জুবায়ের জানান, ‘পর্যায়ক্রমে আরও রাজনৈতিক দল ও সংগঠন আমাদের এই জোটে যুক্ত হবে বলে আমরা আশা করছি।’